সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া নৈরাজ্যে নাকাল ঢাকাবাসী

মুনতাহা মায়মুনা

ঈদের পরদিন (৮ জুন) উত্তরা থেকে পল্টনে থাকা নিকটাত্মীয়ের বাসায় মাংস নিয়ে যাবেন রফিকুল আলম। কিন্তু সড়কে গণপরিবহন সংকট। মাংস নিয়ে ওঠা যাবে না মেট্রোরেলেও। সিএনজি অটোরিকশাই তখন একমাত্র ভরসা। 

রফিকুল আলম হাউজ বিল্ডিং মোড়ে এসে সিএনজি অটোরিকশা চালককে গন্তব্যের কথা বলে ভাড়া জানতে চাইলেন। কিন্তু ৬০০ টাকার নিচে কেউ পল্টন যেতে রাজি হলেন না। বাধ্য হয়ে ৬০০ টাকাতেই সিএনজি অটোরিকশা নিতে হলো তাকে। 

রফিকুল আলমই শুধু নন, ঈদের দিন থেকে রবিবার (৮ জুন) পর্যন্ত যারাই সিএনজি অটোরিকশায় করে কোথাও যেতে চেয়েছেন, তাদের প্রত্যেককেই বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। কখনও কখনও তার পরিমাণ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি। 

ঈদের আগে থেকেই রাজধানীতে গণপরিবহন কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন রুটে যেসব গণপরিবহন চলছে, সেগুলোর ভাড়ার কোনো বালাই নেই। নির্দিষ্ট ভাড়া দিয়ে কেউ যেতে পারছে না গন্তব্যে। 

সিএনজি অটোরিকশায় মিটার থাকলেও সেগুলো কোনো কাজে আসছে না। এ নিয়ে নেই কোনো তদারকি। আগে সড়কে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী সিএনজি অটোরিকশা চালকদের ট্রাফিক পুলিশের কাছে জবাবদিহি করতে হলেও এখন তার ছিটেফোটাও নেই। 

ফলে অধিকাংশ সময়ে যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয় সিএনজি অটোরিকশায়। আর ছুটির দিন মানে সিএনজি চালকদের পোয়াবারো। যাত্রীদের তখন বাধ্য হয়ে সিএনজি চালকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের লিপ্সা মেনে নিতে হয়। 

এ বিষয়ে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও সেটি প্রশমন করার কেউ নেই। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর- এমনটি হয়ে আসছে। স্বল্প আয়ের মানুষেরা অতি প্রয়োজনে সিএনজি অটোরিকশামুখী হলেও অতিরিক্ত ভাড়ার নির্যাতনে নাকাল হচ্ছেন হরহামেশা।

এ বিষয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাইফুল ইসলাম নিউজসাইনকে বলেন, সিএনজি অটোরিকশা চালকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে বের হলে তাদের অন্যায্য এবং বেআইনি দাবির কাছে নত হতে হয়। অথচ এসব নিয়ে কোন মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না। 

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ীর একটি গ্যারেজের অটোরিকশা চালক জসিম নিউজসাইনকে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশা মালিকরা সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত চালকরা বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাবে। এ সংকট থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে মালিকদের আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। তারপর সিএনজি অটোরিকশা চালকদের জবাবদিহি করতে হবে।