সৈয়দপুরে প্রখর তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুর ও আশপাশের জেলা-উপজেলায় প্রখর তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। প্রখর তাপদাহ আর তীব্র গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গত চার দিন সৈয়দপুরসহ এ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। 

আজ বুধবার (১১ জুন) বেলা ৩টায় তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস রের্কড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।

দুপুর ২টার পর শহর ঘুরে দেখা যায়, প্রাচীন এই শহরের ব্যস্ত জনজীবনে প্রচণ্ড গরমে নেমে এসেছে স্থবিরতা। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনসহ মানুষের চলাচল কম। কাজের প্রয়োজন ছাড়া কেই বাইরে বের হচ্ছেন না। আর যারা বেরিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই ছাতা বা মাথায় গামছা ব্যবহার করছেন। মার্কেটগুলোতে নেই ক্রেতার উপস্থিতি।

এই অসহনীয় গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তীব্র গরমের কারণে স্থানীয় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বাড়ছে অসুস্থ রোগীর সংখ্যা। 

সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন রিকশাচালকসহ খেটে খাওয়অ মানুষজন। কড়া রোদের কারণে ঘামে জামাকাপড় ভিজে যাচ্ছে। অল্প পরিশ্র শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। রিকশাচালকরা দুই থেকে তিনবারের বেশি ভাড়া মারতে পারছেন না। একবার রিকশা চালালে পরক্ষণেই বিশ্রাম নিতে হচ্ছে।
 
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হাকিম জানান, উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সৈয়দপুর অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়ারসের উর্ধ্বে ওঠানামা করছে। এ অবস্থায় চলমান তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন থাকতে পারে। 

এদিকে তীব্র গরমের কারণে সৈয়দপুরসহ আশেপাশের এলাকায় জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে ভিড় বেড়েছে রোগীর। এদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। 

স্থানীয় ১০০ শয্যা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ জন চিকিৎসা নিলেও গত ৩-৪ দিন থেকে তা বেড়ে দাড়িয়েছে কয়েকগুণ। বেশির ভাগ রোগীই জ্বর-ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

তবে অনেক রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েও তেমন চিকিৎসাসেবা মিলছে না। 

তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরেও হাসপাতালে আসা সব ধরনের রোগীদের যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।