শনিবার ০৩ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
জাতীয়

৩ লাখ রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশি এনআইডি-জন্মসনদ-পাসপোর্ট

নিউজ ডেক্স ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৩৩ পি.এম

ফাইল ছবি। ফাইল ছবি।

কক্সবাজারের টেকনাফ উখিয়ার ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা অবৈধভাবে এনআইডি, জন্মসনদ ও পাসপোর্ট তৈরি করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

ক্যাম্প ও ক্যাম্পের বাইরে থাকা অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে ভিন্ন কোনো দেশে চলে যাচ্ছে। কেউ আবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা করছে।

যাদের হাতে এনআইডি ও পাসপোর্ট; অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত বছর কক্সবাজার পৌরসভার জন্মসনদ জাতীয়তা সনদ ও প্রত্যয়নপত্রসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের কাগজপত্র নিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট করতে কক্সবাজার আঞ্চলিক অফিসে যান সুপাইত নামে এক রোহিঙ্গা যুবক। বাংলাদেশি এক বৃদ্ধ নারীকে নিজের নানি পরিচয় দিয়ে সঙ্গে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু কথাবার্তা সন্দেহজনক ও আঙুলের ছাপে অসংগতি দেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে সুপাইতকে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

ঐ রোহিঙ্গার প্রত্যয়নপত্র দেওয়া কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিজানকে তলব করে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় কাউন্সিলর মিজান পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে তাদের নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রত্যয়নপত্রে আমার সিল ও স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। ঐ নারীকে আমি বকা দিয়েছি। আর সুপাইতকে আমি চিনি না। তাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

ইয়াকুব নামে আরেক রোহিঙ্গা পেয়ে গেছেন বাংলাদেশি এনআইডি ও ই-পাসপোর্ট। তিনি আরো আগে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা আবু সালেহর আত্মীয়। তার সহযোগিতায় কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাসকারী আরেক পুরনো রোহিঙ্গা আমির হাকিমকে বাবা সাজিয়ে চলতি বছর ২০ জুলাই এনআইডি নিয়েছেন ইয়াকুব। এই আমির হাকিম প্রবাসী।

গত বছর ১৭ ডিসেম্বর ইয়াকুব নিজেকে সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছনখোলা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা উল্লেখ করে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। সেই পাসপোর্ট পেতে ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর তাকে রোহিঙ্গা নন বলে প্রত্যয়নপত্র ও জাতীয়তা সনদ দেন পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। ইয়াকুবের বাবার নাম আমির হাকিম ও মায়ের নাম ছলিমা খাতুন।

এনআইডি নম্বর ৩৭৫৬১০৭২৫০। ঠিকানা দেওয়া হয়েছে আমির হাকিমের বাড়ি, পাহাড়তলী কক্সবাজার। পাসপোর্ট নম্বর এ০৬১৯২৭২৮। পাসপোর্ট প্রদানের তারিখ ১৭-১২-২০২২। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ১৬-১২-২০৩২।

সনদ দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘কোনো রোহিঙ্গাকে সনদ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমার কাছে স্থানীয় লোকজন এসে জন্মসনদ নিয়ে যান। যদি কেউ পেয়ে থাকেন তাহলে সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।’

পিএমখালী ইউপির সংরক্ষিত সদস্য আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘শুধু ইয়াকুব নয়, তার পুরো পরিবারই রোহিঙ্গা। বিষয়টা স্থানীয় বাসিন্দারাও জানেন। কিন্তু কীভাবে তিনি পাসপোর্ট পেলেন তা ভেবে আমিও অবাক হয়েছি।’

অনুসন্ধানে আরো বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার এনআইডি পাওয়ার তথ্য জানা গেছে। তাদের মধ্যে আছেন মোছা. উম্মে কুলসুম (এনআইডি নম্বর-২২১২৬৬০০০১৯), বাবার নাম মোহাম্মদ আলী ও মায়ের নাম নাছিমা বেগম। ঠিকানা কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। একই এলাকার ঠিকানায় মোহাম্মদ জাকারিয়া (২২১২৬৬০০১৬০১)। বাবার নাম মোহাম্মদ আব্বাস ও মায়ের নাম গোলবাহার। নুর হোসেন (২২১২৬৬৪৫৬৭১৫)। বাবার নাম হাফেজ আহমদ ও মায়ের নাম আছিয়া খাতুন। আবু তাহের (২২১২৬৬০০১৭৯৫)। বাবার নাম লাল মোহাম্মদ ও মায়ের নাম মাইয়েশা বেগম। তার ঠিকানা-ফদনার ডেইল, কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। কমরু আক্তার (২২১২৬৬০০১৭১৫)। স্বামীর নাম জাহাঙ্গীর আলম ও মায়ের নাম ছকিনা বেগম। ঠিকানা কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। আলমগীর (২২১২৬৬০০০৮৩৫)। বাবার নাম মো. হাসান ও মায়ের নাম হোসনে আরা। ঠিকানা পশ্চিম কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। সিরাজুল ইসলাম (২২১২৬৬০০০৩৩০)। বাবার নাম আমির হামজা ও মায়ের নাম গোল বানু। ঠিকানা ৮ নম্বর গলি কক্সবাজার। মো. ইসমাইল (২২১২৬৬৫১৪১৬৭)। বাবার নাম শামশুল আলম ও মায়ের নাম মোস্তফা খাতুন। ঠিকানা ফদনার ডেইল, কক্সবাজার। মিজান (২২১২৬৬৫১৭১৩৪)। বাবার নাম কবির আহমদ ও মায়ের নাম হাজেরা খাতুন। ঠিকানা পশ্চিম কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। আবদুর রাজ্জাক (২২১২৬৬৪৫৫৮৪৭)। বাবার নাম আবদুস শুক্কুর ও মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। ঠিকানা সমিতিপাড়া, কক্সবাজার। রশিদ আহমদ (২২১২৬৬০০১২৯০)। বাবার নাম আবদুল হাকিম ও মায়ের নাম আনোয়ারা। ঠিকানা মধ্যম কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। জিয়া রহমান (২২১২৬৬০০১৭৩৯)। বাবার নাম জাফর আলম ও মায়ের নাম খতিজা বেগম। ঠিকানা মধ্যম কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। আজিজুল হক (২২১২৬৬০০০৫৮৩)। বাবার নাম নুরুল হক ও মায়ের নাম ছেহের বেগম। ঠিকানা পূর্ব কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। আবু বক্কর ছিদ্দিক (২২১২৬৬৫১৫৮৬১)। বাবার নাম আলী আহমদ ও মায়ের নাম হাছিনা বেগম। ঠিকানা কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার। মাতবর আলী (৪৬৫৮৬০০০২)। বাবার নাম নজির হোসেন ও মায়ের নাম জাহান আরা। ঠিকানা পশ্চিম পাহাড়তলী, ৭ নম্বর ওয়ার্ড, কক্সবাজার। নুর মোহাম্মদ (২২১২৮৬৩৭৫৫৫)। বাবার নাম মৃত মো. কাশেম। ঠিকানা ইসলামপুর, পাহাড়তলী, কক্সবাজার। ইয়ার মোহাম্মদ (২২১২৮৬৩৭৩৫৫৬)। বাবার নাম মো. কাশেম। ঠিকানা ইসলামপুর, পাহাড়তলী, কক্সবাজার। দিল মোহাম্মদ (২২১২৮৬৩৭৩৫৫৭)। বাবার নাম মো. কাশেম। ঠিকানা ইসলামপুর, পাহাড়তলী, কক্সবাজার। নুরুল বশর (২২১২৮৬৩৭৩৫৬৯)। বাবার নাম কাদের হোসেন। ঠিকানা ইসলামপুর, পাহাড়তলী, কক্সবাজার। জাকির হোসেন (৯১৪২৯৬২৫৮৯)। বাবার নাম আমিরুজ্জামান ও মায়ের নাম কালা বিবি। ঠিকানা দক্ষিণ পাতলী, খরুলিয়া, কক্সবাজার। ছৈয়দ আলম (৫০৮৯৪০৮০১৬)। বাবার নাম উলা মিয়া ও মায়ের নাম ছেমন বাহার। ঠিকানা নাইক্ষ্যংখালী হ্ণীলা, টেকনাফ। ফাতেমা বেগম (২৮৩৯৪০৭৮১০)। বাবার নাম আবুল মঞ্জুর ও মায়ের নাম জোন বিবি। ঠিকানা নাইক্ষ্যংছড়ি, দক্ষিণ হ্ণীলা, কক্সবাজার।

তাদের মধ্যে জাকির ও ফাতেমার এনআইডির সত্যতা যাচাই করে স্বাক্ষর করেছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর বেল্লাল উদ্দিন।

এ বিষয়ে বেল্লাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। জন্মসনদ, এনআইডি নিতে কোনো রোহিঙ্গাকে সহায়তা করার প্রশ্নই আসে না। কেউ আমার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।’

সেগুফা ইয়াছমিন (২০০৪২২১৯০৩১০৬৬৬১)। বাবার নাম কামাল হোসেন ও মায়ের নাম আমেনা খাতুন। ঠিকানা ৩০৪ উলাচামারী (হামজার ছড়া) হ্নীলা বাজার, টেকনাফ। জন্মনিবন্ধনে স্বাক্ষর করেন ২ নম্বর হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (৬ নম্বর ওয়ার্ড) আবুল হোছন। উম্মে সাবিহা। তার জন্ম ২০২৩ সালের ৫ মে। তাকে জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ৬৮২ নাইক্ষ্যংছড়ি, হ্ণীলা। বাবার নাম মোহাম্মদ কাইয়ুম ও মা সেগুফা ইয়াছমিন। তারাও একই ইউনিয়ন থেকে জন্মসনদ নিয়ে এনআইডি তৈরি করেছেন। মোহাম্মদ আইয়ুব নামে আরেক রোহিঙ্গা একই ইউপি থেকে জন্মসদন (২০০১২২১৯০৩১০০৩৫৯৭) নিয়েছেন।

জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পেতে টাকার বিনিময়ে সহযোগিতা করেন উখিয়ার পালংখালীর জহির, মনখালীর শামসুল ইসলাম, কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়ার নাছির, হিমছড়ির বড়ছড়ার জসিমউদ্দিন, ঘোনাপাড়ার শাহাবুদ্দিন জনি, রুমালিয়ারছড়ার জাহাঙ্গীর, মসজিদ মার্কেটের নিচতলার মেহেদী, কালুর দোকানের বশির ও হারুনসহ অন্তত ৪০ জন। তাদের নিয়মিত বিচরণক্ষেত্র পাসপোর্ট অফিস, আদালত চত্বর, পৌরসভা গেট ও জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের আশপাশের এলাকা। এমনকি তাদের মধ্যে অনেকেই শহরে রীতিমতো অফিস খুলে বসেছেন প্রশাসনের নাকের ডগায়।

দালাল চক্রের সঙ্গে জনপ্রতিনিধি, নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট অধিদফতর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যের জড়িত থাকারও তথ্য মিলেছে।

এ দালালদের মধ্যে শাহাবুদ্দিন জনির সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করেন এই প্রতিবেদক। তবে রোহিঙ্গা ভাষায় কথা বলতে না পারায় তিনি ঝামেলা আঁচ করে পিছিয়ে যান। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি জনির সঙ্গে কথা বলেন।

জনি জানান, রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ, এনআইডি ও পাসপোর্ট তৈরি করে দিতে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। এই টাকার ভাগ পান জনপ্রতিনিধি, পাসপোর্ট, নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের লোকেরা। সব টাকা প্রথমে দালাল নেন। তার কাছ থেকে ভাগ হয়ে নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ চলে যায় জিম্মাদার, কাউন্সিলর ও তার ব্যক্তিগত সচিব (পিএস), ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণকারী নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনদাতা, রোহিঙ্গা নয় এমন প্রত্যয়নপত্র ও ভূমি সনদের প্রত্যয়নপত্র যারা দেন তাদের কাছে।

রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রতিবেদককে অবহিত করেছেন জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত শহরের ঘোনারপাড়ায় বসবাসকারী এক দালাল। আবদুর রহমান নামে পরিচয় দিয়ে তিনি  বলেন, রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাওয়া স্থানীয়দের চেয়ে সহজ। কারণ রোহিঙ্গারা চুক্তি করেই পাসপোর্ট করে। ধরা যাক, কোনো রোহিঙ্গা পাসপোর্ট করতে এসেছে। সে যখন কোনো দালালের মাধ্যমে অনলাইনে ফরম পূরণ করবে সঙ্গে সঙ্গে ফরমটির ছবি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাসপোর্ট অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে চলে যাবে। সেই পাসপোর্ট যাচাই করবেন কোন কর্মকর্তা খবর রাখবে দালাল চক্রটি। সেই কর্মকর্তাকেও টাকা দেওয়া হয়। কক্সবাজারে পাসপোর্ট পেতে সমস্যা হলে বান্দরবান বা চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিস থেকে নেয়া হয়।

এত টাকা রোহিঙ্গারা কোথায় পায় এমন প্রশ্নের জবাবে একটি দালাল চক্রের প্রধান রমজান মিয়া বলেন, যেসব রোহিঙ্গা এনআইডি কিংবা পাসপোর্ট করায় তাদের অধিকাংশই মাদক, অস্ত্র পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িত। এছাড়া অনেক রোহিঙ্গার স্বজন বিদেশে রয়েছে কিংবা স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। তাদের অর্থের অভাব হয় না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি এনআইডি পাওয়া ঠেকাতে কক্সবাজারের ৯ ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৮ উপজেলাসহ আশপাশের ৩১টি উপজেলাকে বিশেষ অঞ্চল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এ অঞ্চলের লোকজনকে ভোটার হতে হলে একটি বিশেষ ফরম পূরণ করতে হয়। এ বিশেষ ফরম যাচাইয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে একটি বিশেষ কমিটি। সেই বিশেষ কমিটির সুপারিশ ছাড়া কাউকে ভোটার করা হয় না। তারপরও রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে এনআইডি ও পাসপোর্ট। রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট করার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের টাকা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে বিদেশে থাকা রোহিঙ্গা গোষ্ঠী ও স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যাওয়া পুরনো রোহিঙ্গারা।

পুরনো রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় নতুনরা ক্যাম্প ছেড়ে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কোনো গ্রামে আশ্রয় নেয়। এরপর জন্মনিবন্ধন পেতে দালাল চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। দালালের পরামর্শে ওই গ্রামের কিংবা আশপাশের গ্রামের ভোটার এমন কাউকে টাকার দিয়ে বাবা-মা সাজায়। দালালদের সহায়তায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তারা জন্মনিবন্ধন সনদ নেয়। পরবর্তী ধাপে ভোটার তালিকার বিশেষ ফরমে সাজানো বাবা-মার সব তথ্য ব্যবহার করা হয় এবং আগের জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর ও সহযোগিতায় বিশেষ কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়। কাজ বাকি থাকে শুধু ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ। এখানেও যাতে কোনো সমস্যা না হয় তার জন্য আগে থেকে ম্যানেজ করা হয় নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। এই পুরো প্রক্রিয়ায় ১০-১২ লাখ টাকা দিতে হয় রোহিঙ্গাদের।

এ বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী  বলেন, ‘শহরের পাহাড়তলী, বৃহত্তর ঘোনারপাড়া, বাস টার্মিনাল, কলাতলী, সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়া, নুনিয়ারছড়া ও পেশকার পাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। তাদের অনেকে এনআইডিও নিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলরদের সহযোগিতায় তাদের শনাক্তের কাজ চলমান রয়েছে।’ 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়ায় পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। পাসপোর্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব আছে, কিন্তু তদন্তে গরমিল পাওয়া গেছে, এরকম অনেকের ক্ষেত্রে আমরা নেতিবাচক প্রতিবেদন দিয়েছি।’
সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ

নবীন নিউজ/পি

এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

কারও প্রতিপক্ষ নয় ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ

news image

খালেদা জিয়াকে ৪-৫ মে দেশে আনার প্রস্তুতি

news image

নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকদের অবস্থা বদলাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

news image

পুরোনো যানবাহন অপসারণের ঘোষণা বিআরটিএ'র

news image

আওয়ামী লীগ নেতা মায়া চৌধুরী ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ

news image

বাংলাদেশের জিআই পণ্য এখন ৫৫টি

news image

উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগের দাবিতে কুমিল্লায় বিক্ষোভ!

news image

দলগুলোর সমর্থন না পেলে সব উদ্যোগ নিষ্ফল হবে : সিইসি

news image

ঢাকার ৫০ জায়গায় 'এয়ার পিউরিফায়ার', লক্ষ্য বায়ুদূষণ রোধ

news image

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন

news image

মার্চ মাসে দেশে ১৬৩ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার

news image

এবার ভিন্নধর্মী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি'র তিন সংগঠন

news image

মে মাসেই শুরু হচ্ছে শেখ হাসিনার বিচার: আল জাজিরাকে ড. ইউনূস

news image

রোম থেকে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা

news image

আন্দোলনের মুখে স্থগিত ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা

news image

এবার সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া

news image

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে ইসির গেজেট

news image

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

news image

বিএনপি কর্মী হত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের নামে মামলা

news image

লোডশেডিং হচ্ছে ও হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

news image

কবি দাউদ হায়দারের চিরবিদায়

news image

রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

news image

জাতিসংঘের দুটি আঞ্চলিক সংস্থায় নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ

news image

বিসিএস প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বন্ধ হচ্ছে বিজি প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপানো

news image

কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

news image

তদন্ত ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা যাবে সরকারি কর্মচারীদের 

news image

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের আল্টিমেটাম, এনসিপি নেতাদের সমালোচনা

news image

সংস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকবে না নির্বাচন কমিশন: সিইসি

news image

অনেক বাড়ির মালিকও টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড নিয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

news image

শিরীন-পলকসহ ১২ জন ৫ আগস্ট সংসদ ভবনে পালিয়ে ছিলেন