নিউজ ডেক্স ০৪ জুন ২০২৪ ০৫:৫৪ পি.এম
রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৯১ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। এর মধ্যে ১৯ গ্রাহককেই দেওয়া হয়েছে ৬৯ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আবার শীর্ষ পাঁচ গ্রাহকের কাছে ব্যাংকটির পাওনা ৪৮ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ৫৩ দশমিক ৬০ শতাংশ।
বিতরণের ক্ষেত্রে উদারহস্ত হলেও সময়মতো আদায় করতে না পারায় এই ঋণ এখন জনতা ব্যাংকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীর্ষ ঋণগ্রহীতা ১৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছয়টি এরই মধ্যে খেলাপির তালিকায় চলে গেছে।
ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণের ৮১ দশমিক ২১ শতাংশই তাদের কাছে আটকে আছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো জনতা ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের মোট পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৫০১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ। এর মধ্যে ছয় প্রতিষ্ঠানের খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। আর এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ব্যাংকটির আটকে থাকা মোট ঋণের পরিমাণ ২২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা।
অবশ্য সর্বশেষ হিসাবে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৩১ শতাংশ।
জানতে চাইলে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল জব্বার কালবেলাকে বলেন, ‘এটা তো এক দিনে হয়নি। ঋণের স্তূপ গত ৫০ বছরে হয়েছে, যা সবাই জানে।’
জানা গেছে, হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ ঋণ দিতে শাখা পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম পরিচালনা পর্ষদও উদারহস্ত ছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। সার্বিকভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই ব্যাংকটিতে সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি তৈরি হয়। নানা অনিয়মের কারণে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়েছে আর্থিক ভিত্তি। বিদেশি বাণিজ্যে নানা অনিয়মের কারণে এরই মধ্যে ব্যাংকটির রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে ঋণ বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন তথ্য বলছে, জনতা ব্যাংকের শীর্ষ গ্রাহকদের মধ্যে একটি বিশেষ গ্রুপ ঋণ নিয়েছে ২৩ হাজার ৭১ কোটি টাকা। যেখানে ফান্ডেড ২২ হাজার ২০৩ কোটি এবং নন-ফান্ডেড ঋণ ৮৭১ কোটি টাকা। আরেকটি বিশেষ গ্রুপ আছে দ্বিতীয় অবস্থানে, যাদের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৯ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্য ফান্ডেড ৮ হাজার ৯৯২ কোটি এবং নন-ফান্ডেড ঋণ ৭৯৬ কোটি টাকা। এই গ্রুপটি গত ডিসেম্বর পর্যন্ত জনতা ব্যাংকে ১ হাজার ২১৫ কোটি টাকার খেলাপি।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বহুল আলোচিত অ্যাননটেক্স গ্রুপ। ২০২৩ সাল পর্যন্ত পোশাক রপ্তানিকারক এ প্রতিষ্ঠানটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭০৮ কোটি টাকাই খেলাপি হয়ে গেছে। সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধের শর্তে জনতা ব্যাংক এই গ্রুপকে ৩ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকার সুদ মওকুফ সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে অডিট জালিয়াতি ও কেলেঙ্কারি খুঁজে পেলে গত এপ্রিলে সেই সুবিধা বাতিল করে দেয়। পাশাপাশি ৭ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা খেলাপি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করতে বলা হয়।
জনতা ব্যাংকের ঋণগ্রহীতার তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনা ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।
পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে আলোচিত ঋণখেলাপি ক্রিসেন্ট গ্রুপ। এই গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানই শীর্ষ গ্রাহকের তালিকায় রয়েছে। তাদের সম্মিলিত ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ২ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা।
ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)—যাদের কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনা ৩ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা। সপ্তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের কাছে (বিসিআইসি) ২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা পাবে ব্যাংকটি। এ ছাড়া বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) কাছে পাওনার পরিমাণ ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা।
অষ্টম অবস্থানে রয়েছে ঢাকাভিত্তিক আরেকটি বিশেষ শিল্প গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির ঋণ ২ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। নবম অবস্থানে থাকা থার্মেক্স গ্রুপের কাছে পাওনা ১ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা। আর দশম অবস্থানে থাকা রানকা গ্রুপের কাছে জনতা ব্যাংক পাবে ১ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৫৫২ কোটি টাকা। এ ছাড়া রতনপুর গ্রুপের ১ হাজার ২২৭ কোটির পুরোটাই খেলাপি। সিকদার গ্রুপের ৮২৯ কোটি, ঢাকাভিত্তিক আরেকটি বিশেষ শিল্প গ্রুপের কাছে ৭৮৭ কোটি এবং একটি বিশেষ শিল্প গ্রুপের সিমেন্ট কারখানার ৬৭৪ কোটি। এর বাইরে ৬২৫ কোটি খেলাপিসহ চৌধুরী গ্রুপের কাছে পাওনা ৬৫৮ কোটি, হাবিব হোটেল ইন্টারন্যাশনালের ৬৩৫ কোটি, আনন্দ শিপইয়ার্ডের ৬১৪ কোটি এবং বিআর স্পিনিং লিমিটেড থেকে জনতা ব্যাংকের পাওনা ৫৭৪ কোটি টাকা।
হাতেগোনা কয়েক প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ ঋণ দেওয়ার বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কালবেলাকে বলেন, ‘দেশের সার্বিক বাণিজ্যের বেশিরভাগই হয় ঢাকা ও চট্টগ্রামে। সুতরাং এ দুই জায়গায় বিনিয়োগ বেশি হতে পারে। তবে অল্প গ্রাহকে যদি বিনিয়োগ কেন্দ্রীভূত হয়, তাহলে এটা কোনোভাবেই ভালো নয়।’
মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ দেওয়ার তথ্য জানানো হলে তিনি বলেন, ‘হয়তো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমোদন নিয়েই এই ঋণ দেওয়া হয়েছে। তবে আইনত এটি অন্যায় না হলেও নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ ব্যাংকিং খাতের এই দুরবস্থার সময় ঋণকে পুঞ্জীভূত করে ফেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
নবীন নিউজ/জেড
কারও প্রতিপক্ষ নয় ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ
খালেদা জিয়াকে ৪-৫ মে দেশে আনার প্রস্তুতি
নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকদের অবস্থা বদলাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
পুরোনো যানবাহন অপসারণের ঘোষণা বিআরটিএ'র
আওয়ামী লীগ নেতা মায়া চৌধুরী ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ
বাংলাদেশের জিআই পণ্য এখন ৫৫টি
উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগের দাবিতে কুমিল্লায় বিক্ষোভ!
দলগুলোর সমর্থন না পেলে সব উদ্যোগ নিষ্ফল হবে : সিইসি
ঢাকার ৫০ জায়গায় 'এয়ার পিউরিফায়ার', লক্ষ্য বায়ুদূষণ রোধ
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন
মার্চ মাসে দেশে ১৬৩ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার
এবার ভিন্নধর্মী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি'র তিন সংগঠন
মে মাসেই শুরু হচ্ছে শেখ হাসিনার বিচার: আল জাজিরাকে ড. ইউনূস
রোম থেকে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা
আন্দোলনের মুখে স্থগিত ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা
এবার সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া
ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে ইসির গেজেট
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিএনপি কর্মী হত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের নামে মামলা
লোডশেডিং হচ্ছে ও হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
কবি দাউদ হায়দারের চিরবিদায়
রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘের দুটি আঞ্চলিক সংস্থায় নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ
বিসিএস প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বন্ধ হচ্ছে বিজি প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপানো
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত
তদন্ত ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা যাবে সরকারি কর্মচারীদের
জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের আল্টিমেটাম, এনসিপি নেতাদের সমালোচনা
সংস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকবে না নির্বাচন কমিশন: সিইসি
অনেক বাড়ির মালিকও টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড নিয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
শিরীন-পলকসহ ১২ জন ৫ আগস্ট সংসদ ভবনে পালিয়ে ছিলেন