শনিবার ০৩ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
জাতীয়

নির্বাচনি প্রতীকের জন্ম যে ভাবে

নিউজ ডেক্স ০৩ মার্চ ২০২৪ ০৬:৩৬ পি.এম

আনুষ্ঠানিক প্রচারযুদ্ধ শুরু হলে প্রার্থীরা ছুটে যাবেন ভোটারদের দুয়ারে। ভালোবাসা ,ভরসা আর মিষ্টি কথায় ভোটারদের কাছে টানতে চাইবেন। কিন্তু ভোটাররা কি প্রার্থীকে দেখবেন, না দলীয় প্রতীক দেখে ব্যালট পেপারে সিল দেবেন? নাকি দুটোর হিসাবই মেলাবেন?

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ছোট-বড় মিলিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯টি। এই দলগুলোর মার্কা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ২০০৮ সালের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বিধিমালার বিধি -এর উপবিধি অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নির্ধারিত ১৪০টি প্রতীক থেকে প্রতীক বাছাই করতে পারবে। এই বিধির সংশোধন আনা হয় ২০১৭ সালে। ২০১৭ সালের সংশোধিত বিধিতে ৬৪টি প্রতীক উল্লেখ করা হয়। যেখান থেকে পুরাতন দল ছাড়াও নতুন নিবন্ধিত দল প্রতীক বাছাই করতে পারবে।

সে হিসাবে ৬৪টি প্রতীকের মধ্যে রয়েছে আপেল, কলার ছড়ি, কুড়াল, আম, কাঁঠাল, কুঁড়েঘর, উদীয়মান সূর্য, কাস্তে, কোদাল, একতারা, কুমির, খাট, কবুতর, কুলা, খেজুরগাছ, গরুর গাড়ি, দালান, মাথাল, গাভী, দেয়ালঘড়ি, মিনার, গামছা, ধানের শীষ, মোমবাতি, গোলাপ ফুল, নোঙ্গর, রকেট, ঘণ্টা, নৌকা, রিকশা, চাকা, ফুলকপি, লাঙ্গল, চাবি, ফুলের মালা, শঙ্খ, চেয়ার, বাঘ, সিংহ, ছড়ি, বটগাছ, স্যুটকেস, ছাতা, বাইসাইকেল, হাত (পাঞ্জা), ট্রাক, বাঁশি, হাতঘড়ি, টেলিভিশন, বেঞ্চ, হাতপাখা, ডাব, বেলুন, হাতুড়ি, তবলা, মই, হারিকেন, তারা, মোটরগাড়ি (কার), হুক্কা, তরমুজ, মশাল, দাবাবোর্ড, মাছ।

এই প্রতীকগুলো থেকেই ৪৯টি নিবন্ধিত দল পছন্দমতো প্রতীক কিংবা 'মার্কা' সংগ্রহ করেছে। প্রতীকের তালিকায় নজর দিলে দেখা যাবে, বাংলাদেশে নদী কৃষিভিত্তিক প্রতীকের পাশাপাশি ফল, ফুল, পশু-পাখি, দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী সবই রয়েছে।বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে ভোটের যুদ্ধ হয় মূলত আওয়ামী লীগের নৌকা,বিএনপির ধানের শীষ ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল  প্রতীকের মধ্যে। তবে এই তিন প্রতীকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই পাকিস্তান আমল থেকে। জেনে নেওয়া যাক কীভাবে এল এসব প্রতীক।

*নৌকা প্রতীক

আওয়ামী মুসলিম লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল পাকিস্তান খেলাফত পার্টির সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালের ডিসেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়। শরিক হিসেবে যুক্তফ্রন্টে আরও ছিল মাওলানা আতাহার আলীর নেজামে ইসলাম পার্টি, বামপন্থী গণতন্ত্রী দলের নেতা ছিলেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ এবং মাহমুদ আলী সিলেটী। যুক্তফ্রন্ট নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথমে ভোটের লড়াই শুরু করে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে। সেই সময় যুক্তফ্রন্টের সবচেয়ে বড় শরিক দল ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৪ সালের থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান পরিষদের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থীরা ২২৩টি আসনে বিজয়ী হন।  ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে নৌকার আগে লাঙ্গল প্রতীক চেয়েছিল যুক্তফ্রন্ট। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন লাঙ্গল প্রতীক যুক্তফ্রন্টকে দেয়নি। এর কারণ সম্পর্কে বিশিষ্ট সাংবাদিক তোয়াব খান বলেন, লাঙ্গল ছিল শেরেবাংলা কে ফজলুল হকের অবিভক্ত ভারতের কৃষক প্রজা পার্টির। সে জন্য যুক্তফ্রন্ট পরে নৌকাকে প্রতীক হিসেবে বেছে নেয়।

যুক্তফ্রন্ট ভেঙে গেলে নৌকা প্রতীক পায় আওয়ামী লীগ। প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী মুসলিম লীগ ছিল যুক্তফ্রন্টের মধ্যে সবচেয়ে বড় দল। প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রার্থীরা বেশি আসনে জয়ী হন।

১৯৫৭ সালে মুসলিম শব্দ বাদ দিয়ে জন্ম নেয় আওয়ামী লীগ এবং নৌকা প্রতীকও পায় দলটি। কিন্তু নৌকায় চড়ে নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগকে অপেক্ষা করতে হয় আরও ১৩ বছর। পাকিস্তানে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদ নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করে ১৬০টি আসনে জয়ী হয়। সেই থেকে নৌকায় চড়ে নির্বাচন করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ইতিহাসবিদের কাছ থেকে জানা গেছে, নৌকা ছিল পূর্ববঙ্গের প্রতীক। বাংলায় নদীপথ ছাড়া চলাচলের উপায় ছিল না। নদীতে নৌকা মানেই পালতোলা নৌকা। নদী আর নৌকা নিয়েই গানচর্চা হতো পূর্ববঙ্গে। এই প্রতীকটা তাই ঐতিহ্যগতভাবে এই অঞ্চলের মানুষের মননে গাঁথা হয়ে গেছে।

*ধানের শীষ  প্রতীক

ধানের শীষ উপমহাদেশের এক প্রাচীন ও ঐতিহাসিক প্রতীক। ধানের শীষ প্রতীকটির আবির্ভাব হয়েছিল জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে।  ১৯৫৭ সালের ১৮ই মার্চ পররাষ্ট্রের বিষয়ে মত পার্থক্যের কারণে মাওলানা ভাসানী তার নিজের প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন।

১৯৬৭ সালে দল বিভক্তির পর  ওয়ালী পার্টি  তার প্রতীক হিসাবে কুঁড়েঘর এবং বিএনপি  ধানের শীষ চূড়ান্ত প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়ে ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বছর পর যখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠিত হয়, তখন ভাসানীর অধিকাংশ ন্যাপ কর্মী দলটিতে যোগ দেন। দল গঠনের পর থেকেই ধানের শীষ প্রতীকটি বিএনপি ব্যবহার করতে শুরু করে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ধানের শীষ প্রতীক ব্যবহার করা হয় ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। দেশের দ্বিতীয় এই সংসদ নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের  প্রতীক ছিল এটি। ভাসানী ন্যাপের বড় একটি অংশের যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে ১৯৭৮ সালে বিএনপির জন্ম হয়। এই অংশটির নেতৃত্ব ছিলেন মশিউর রহমান যাদু মিয়া।

*লাঙ্গল প্রতীক

উপমহাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনের ধারায় পড়েছিল লাঙ্গল। শেরেবাংলা কে ফজলুল হকের অবিভক্ত ভারতের কৃষক প্রজা পার্টির লাঙ্গল ধরে ফেলে আতাউর রহমান খানের জাতীয় লীগ। পাকিস্তানে ১৯৭০ সালে জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দল লাঙ্গল প্রতীকে অংশ নেয়। এইচ এম এরশাদের শাসনামলে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন আতাউর রহমান খান। তাঁর কাছ থেকে লাঙ্গল প্রতীকটি জাতীয় পার্টির জন্য পছন্দ করে ফেলেন এরশাদ।

আসলে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সব দলই নিজেদের গণমানুষের দল হিসেবে পরিচিত করাতে চায়। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিও তেমনই মনে করে। প্রসঙ্গে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের আগে প্রতীকগুলো ওপেন ছিল। আইন ছিল আগে এলে আগে প্রতীক পাবেন। তারপরও অলিখিত নিয়ম ছিল এই দলকে ওই প্রতীক দিতে হবে। কিন্তু আইন অনুযায়ী এই প্রতীকগুলো অন্য দল চাইত, তাহলে নির্বাচন কমিশন সেটি দিতে বাধ্য থাকত। তবে বড় তিনটি দলের প্রতীকে একটি মিনিং আছে। তা হলো এরা পিপলস পার্টি, এলিট পার্টি নয়।

*কৃষিভিত্তিক প্রতীক

কৃষিভিত্তিক প্রতীক নিয়ে অন্যান্য দলও অবশ্য থেমে থাকেনি। রাজনৈতিক দলের পছন্দের তালিকায় কাস্তে, কোদাল, সোনালী আঁশ সবই আছে। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রতীক কাস্তে, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির প্রতীক কোদাল। পাশাপাশি নতুন নিবন্ধিত দল তৃণমূল বিএনপির প্রতীক সোনালী আঁশ। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল  প্রতিনিধিত্ব করেছিল মশাল মার্কা নিয়ে। মাঝে অনেক উত্থান-পতন এসেছে। কিন্তু মশাল মার্কা নিয়ে লড়াই এখনো চলছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশের মার্কা কুলা। পাশাপাশি বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের  মার্কা মই। হাতুড়ি নিয়ে নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

*ফলে-ফুলে ভরপুর প্রতীক

শুধু কৃষিই নয়, ফল-ফুল সবই ঠাঁই পেয়েছে প্রতীকের তালিকায়। ফলের রাজা আম থেকে জাতীয় ফল কাঁঠাল দুটোই দেখতে পাওয়া যায় নির্বাচনী দলের প্রতীকে। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক কাঁঠাল, আবার বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রতীক আম। আম, কাঁঠাল ছাড়াও ডাব প্রতীকেরও দেখা মিলবে বাংলাদেশ কংগ্রেস দলে।এছাড়াও ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের প্রতীক আপেল।  এছাড়াও রয়েছে খেজুরগাছ, বটগাছ , গোলাপ ফুল, ফুলের মালা,

*পশু-পাখি প্রতীক

ফুল-ফল ছাড়া বিভিন্ন পশু-পাখিও রয়েছে নির্বাচনী প্রতীকের তালিকায়। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রী পার্টির প্রতীক কবুতর। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের প্রতীক গাভী। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের  প্রতীক সিংহ।

*যানবাহন প্রতীক

বাংলাদেশের নির্বাচনী দলের প্রতীকে পশু, পশুচালিত গাড়ির পাশাপাশি অন্যান্য বাহনও রয়েছে। পশুচালিত বাহনের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির  প্রতীক গরুর গাড়ি। আবার জাতীয় পার্টির  প্রতীক বাইসাইকেল।এছাড়াও মোটরগাড়ি , চাকা, রিকশা  প্রতীক রয়েছে।

*শ্রমিক লীগ

নির্বাচনে গামছা নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। তাছাড়া হাতপাখা হাতে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একইভাবে দেয়ালঘড়ি নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে খেলাফত মজলিস।

*উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রতীক

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যান্য দেশ প্রতীক নির্বাচনে তাদের সংস্কৃতি ঐতিহ্যের ছোঁয়া রেখেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কথাই ধরা যাক। ১৯৫১ সালে ভারতের প্রথম লোকসভা নির্বাচনে ১৪টি প্রতীক অনুমোদন করে নির্বাচন কমিশন। ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন এবং বৃহত্তম দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির বর্তমান প্রতীক পদ্মফুল। তবে এটি তাদের প্রথম নির্বাচিত প্রতীক নয়। এখন পর্যন্ত বিজেপি তিনবার তাদের নির্বাচনী প্রতীক পরিবর্তন করেছে।

বিজেপি ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় জনসঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তখন তাদের নির্বাচনী প্রতীক ছিল প্রদীপ। প্রদীপ অনেকটাই মঙ্গলপ্রদীপের মতো দেখতে; যা ভারতের সংস্কৃতিতে শুভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭৭ সালের দিকে দলের নাম হয় জনতা পার্টি। সে সময় প্রতীক ছিল চাকার ভেতর লাঙল কাঁধে কৃষক। পরবর্তীকালে বিজেপি বা ভারতীয় জনতা পার্টি পদ্মফুলকেই তাদের দলীয় প্রতীক হিসেবে বেছে নেয়। তিনটি প্রতীকের মধ্যে বিজেপি তাদের দেশীয় ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে।

ভারত ছাড়াও নেপালের নির্বাচনী প্রতীকের মধ্যে দেখা যায় বাস, মাদল, সূর্য, গাছ, ছাতা, গ্লাস প্রভৃতি প্রতীক। শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক দলের তালিকায় প্রায় ৮৫টি দল রয়েছে। ৮৫টি দল ভিন্ন ভিন্ন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। শ্রীলঙ্কার নির্বাচনী প্রতীকের মধ্যে আছে পাঞ্জা, বাইসাইকেল, প্রজাপতি, ক্যাঙ্গারু, পান, কাপ, টেলিফোন, তারা, চোখ, গাছ, ময়ূর প্রভৃতি।

*হাতি বনাম গাধা: শতাব্দীজোড়া দ্বৈরথ

যে নির্বাচনটি ঘিরে বিশ্বজুড়ে উন্মাদনা দেখা যায়, সেটি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে হাতি বনাম গাধার দ্বৈরথও নতুন কিছু নয়। দুই শতাব্দী পুরোনো নির্বাচনের ইতিহাসে ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রতীকের বয়সও দুই শতাব্দীর মতোই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই দলের প্রতীকের কারিগর একই ব্যক্তি। আমেরিকান কার্টুনের জনক টমাস ন্যাস্ট প্রধান দুই দলের প্রতীক এঁকে গাধা এবং হাতির দ্বৈরথের সূত্রপাত ঘটান।

১৯ শতকের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক কার্টুন নিয়ে আলোচনা হতো অনেক। ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচকভাবে উপস্থাপিত হওয়া কার্টুনগুলো কখনো হয়ে উঠত হাস্যরসের প্রতীক আবার কখনো বহন করত জটিল অর্থ।

সেই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যান্ড্রু জ্যাকসন । নির্বাচনের সময় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাকে 'জ্যাকঅ্যাস' অর্থাৎ গাধা বলে ডাকত। বিদ্রুপ করে ডাকা হলেও 'জ্যাকঅ্যাস' নামটি তখন জ্যাকসনের পছন্দ হয়। পরবর্তী সময়ে গাধাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেন। সেই সময়ে কার্টুনশিল্পী টমাস ন্যাস্ট 'জ্যাকঅ্যাস'কে কেন্দ্র করে একটি কার্টুন আঁকেন, যেখানে দেখা যায় জ্যাকসনের মাথা একটি গাধার শরীরের ওপর বসানো। এর পর থেকেই গাধা প্রতীকের তালিকায় পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের অবসানের পর ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্য নেতাদেরও প্রতীক হয়ে ওঠে গাধা।

*অন্যান্য

এগুলো ছাড়াও ছাতা, উদীয়মান সূর্য, মাছ, চেয়ার, হাতঘড়ি, মিনার, মোমবাতি, টেলিভিশন, একতারা প্রভৃতি প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করছে বিভিন্ন দল।

তাই এটা বলা যায়, নির্বাচন প্রতীক যখন নির্ধারণ করা হয়েছিল, তখন জনসাধারণের কথা ভেবেই নির্ধারিত হয়েছিল। অক্ষর জ্ঞানহীন মানুষও যাতে চিহ্ন দেখে ভোট দিতে পারে, তার জন্য নেওয়া হয়েছিল এই ব্যবস্থা। সময় বিভিন্ন প্রতীক রাজনৈতিক দলের পরিচয়স্বরূপ হয়ে থাকে। তাই রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের প্রতীক চেনানোর জন্য পরিশ্রমও করে অনেক বেশি। ব্যানারে-পোস্টারে ছেয়ে ফেলে পুরো এলাকা। কান পাতলেই শোনা যায় '...মার্কায় ভোট দিন' স্লোগান।

আরও খবর

news image

খালেদা জিয়াকে ৪-৫ মে দেশে আনার প্রস্তুতি

news image

নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকদের অবস্থা বদলাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

news image

পুরোনো যানবাহন অপসারণের ঘোষণা বিআরটিএ'র

news image

আওয়ামী লীগ নেতা মায়া চৌধুরী ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ

news image

বাংলাদেশের জিআই পণ্য এখন ৫৫টি

news image

উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগের দাবিতে কুমিল্লায় বিক্ষোভ!

news image

দলগুলোর সমর্থন না পেলে সব উদ্যোগ নিষ্ফল হবে : সিইসি

news image

ঢাকার ৫০ জায়গায় 'এয়ার পিউরিফায়ার', লক্ষ্য বায়ুদূষণ রোধ

news image

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন

news image

মার্চ মাসে দেশে ১৬৩ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার

news image

এবার ভিন্নধর্মী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি'র তিন সংগঠন

news image

মে মাসেই শুরু হচ্ছে শেখ হাসিনার বিচার: আল জাজিরাকে ড. ইউনূস

news image

রোম থেকে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা

news image

আন্দোলনের মুখে স্থগিত ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা

news image

এবার সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া

news image

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে ইসির গেজেট

news image

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

news image

বিএনপি কর্মী হত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের নামে মামলা

news image

লোডশেডিং হচ্ছে ও হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

news image

কবি দাউদ হায়দারের চিরবিদায়

news image

রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

news image

জাতিসংঘের দুটি আঞ্চলিক সংস্থায় নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ

news image

বিসিএস প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বন্ধ হচ্ছে বিজি প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপানো

news image

কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

news image

তদন্ত ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা যাবে সরকারি কর্মচারীদের 

news image

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের আল্টিমেটাম, এনসিপি নেতাদের সমালোচনা

news image

সংস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকবে না নির্বাচন কমিশন: সিইসি

news image

অনেক বাড়ির মালিকও টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড নিয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

news image

শিরীন-পলকসহ ১২ জন ৫ আগস্ট সংসদ ভবনে পালিয়ে ছিলেন

news image

হেফাজত নেতাদের মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: আসিফ নজরুল