শুক্রবার ০২ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
অর্থ ও বাণিজ্য

ট্রাম্পের শুল্কে পোশাকের চাহিদা কমবে

 কেবি ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৩ পি.এম

newssign24 ছবি সংগৃহীত

এনএস ডেস্ক

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, এর প্রভাব নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে। অর্থনীতিবিদ ও রপ্তানিকারকরা বলছেন, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে, বিশেষ করে পোশাকশিল্পে। এক্ষেত্রে পোশাকের চাহিদা কমতে পারে এবং চাপে পড়বে ছোট রপ্তানিকারকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এত দিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।

দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা বলছেন, সব দেশের ওপর পালটা শুল্ক আরোপ হওয়ায় তৈরি পোশাকের দাম বাড়বে। তাতে পোশাকের চাহিদা কমে যেতে পারে। তাছাড়া শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমাতে উত্পাদকদের চাপে রাখবে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে ছোট রপ্তানিকারকরা চাপে পড়বেন।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, আপাতত একটা ধাক্কা বলে মনে হচ্ছে। সেটা আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার মতো নয়। ভারত-পাকিস্তান ছাড়া প্রতিযোগী সব দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। বিভিন্ন পূর্বাভাস বলছে, আগামী প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি কমবে, মূল্যস্ফীতি বাড়বে। এর ওপর সব আমদানি পণ্যে এক রকম উচ্চ হারের শুল্ক আরোপ মূল্যস্ফীতিকে আরো উসকে দেবে। এ অবস্থায় ভোক্তা পর্যায় থেকে চাপ আসবে। আগামী সপ্তাহেই হয়তো এ রকম খবর শোনা যাবে। এ রকম পরিস্থিতি সস্তা দামের মৌলিক পণ্য রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে মার্কিন ব্র্যান্ড ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা হয়তো নাও কমতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চেম্বারের (বিসিআই) সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা পালটা শুল্ক বলবত্ থাকলে তৈরি পোশাকের কিছু ক্রয়াদেশ ভারত ও পাকিস্তানে চলে যাবে। শুল্ক কম থাকায় এ দেশগুলোয় হেভি জার্সি, ডেনিম প্যান্ট, হোম টেক্সটাইলের মতো ক্রয়াদেশ চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের দাম বাড়বে। এতে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। অন্যান্য দেশেও পালটা শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ফলে সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে যেতে পারে। সেটি হলে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ কমবে। প্রতিযোগিতা আরো বেড়ে যাবে।

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ করে যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে এতে পোশাকশিল্প রপ্তানি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে এটা থেকে কিছু সুবিধা নেওয়ার পরিস্থিতিও এখানে আছে, যদি আমরা আলোচনা-সমঝোতা করে সেটা নিতে পারি। যেমন, আমরা বিশ্লেষণ করে দেখেছি যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমরা প্রধানত কপার, সালফেট এই জাতীয় ধাতু আমদানি করি ৫ বিলিয়ন ডলারের মতো। সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের মতো সয়াবিন আমদানি করি, এটা শুল্কমুক্ত। তৃতীয় সর্বোচ্চ আমদানি করি সুতা (কটন), সেটাও ২ বিলিয়নের ওপরে এবং সেটাও শুল্কমুক্ত। এর পরে আছে অ্যালকোহল। আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করলে তার মধ্যে সাড়ে ১০ বা ১১ বিলিয়নের মতো থাকে শুল্কমুক্ত। কিন্তু আমেরিকাতে বাংলাদেশের যে প্রধান রপ্তানি পণ্য, সেখানে কিন্তু শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নেই, কখনোই ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে সাড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক এত দিন ছিল। সেখানে নতুন করে ৩৭ শতাংশ যোগ হয়েছে। মোট সাড়ে ৫২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে হবে এখন। এই জায়গাতে আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে পারি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্য, অর্থাত্ বাংলাদেশ যেসব আমদানি করে, তার প্রধান তিনটি আইটেমই কিন্তু শুল্কমুক্ত আসে। তোমরা আমাদের সেই আলোকে দিতে পারো কি না?

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, মার্কিন প্রশাসনের দাবি, বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। এখন সরকার যা করতে পারে তা হলো—যুক্তরাষ্ট্রের ৭৪ শতাংশ কীভাবে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনা যায় তার কৌশল নির্ধারণ করা। তাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেওয়া যাবে।

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৭২০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা ঐ বছরের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ১৯ শতাংশ। অন্যান্য পণ্য মিলে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে মোট রপ্তানি হয় ৮৫০ কোটি ডলারের পণ্য। তৈরি পোশাকের বাইরে উল্লেখযোগ্য অন্য রপ্তানি পণ্যের মধ্য রয়েছে জুতা, টেক্সটাইল সামগ্রী, ওষুধ ও বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য। অন্যদিকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা উল্লেখযোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম, ভুট্টা, মেশিনারিজ, লোহা ও ইস্পাত পণ্য।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

সোনার দামে অস্থিরতা: বড় উত্থানের পর বড় দরপতন

news image

লিটারে এক টাকা কমলো জ্বালানি তেলের দাম

news image

আইএমএফ-এর সব শর্ত মেনে ঋণ নিতে চাই না: অর্থ উপদেষ্টা

news image

বাতিল হলো নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স

news image

বিশ্বব্যাংকের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঝুঁকির লাল শ্রেণীতে বাংলাদেশ

news image

বেশির ভাগ সবজির দাম ৭০ টাকার ওপরে

news image

ক্রেডিট কার্ড-এর ব্যবহার কমেছে দেশে-বিদেশে

news image

মিষ্টির দামের সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করতে চান এনবিআর চেয়ারম্যান

news image

আইএমএফ'র ঋণের বাকি দুই কিস্তির সিদ্ধান্ত জুনে

news image

ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের জন্য দুঃসংবাদ আসছে

news image

২ জুন বাজেট ঘোষণা করবে অন্তর্বর্তী সরকার, ভাঙছে রেওয়াজ

news image

আগামী বাজেট: কমতে পারে আকার, বাড়বে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা

news image

আগামীর বাজেট ব্যবসাবান্ধব হবে বলে জানালেন এনবিআর চেয়ারম্যান

news image

আরাকান আর্মির বাধায় টেকনাফ বন্দরে পণ্য আমদানি বন্ধ

news image

২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

news image

এপ্রিলের প্রথম ১২ দিনে রেমিটেন্স এল ১২৫ কোটি ডলার

news image

লিটারে ১৪ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম

news image

শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো ৩৩ শতাংশ

news image

এবার স্বর্ণের দাম বাড়লো ভরিতে ৪১৮৭ টাকা

news image

পাচার হওয়া সম্পদের বড় অংশ জব্দ হবে ছয় মাসের মধ্যে: গভর্নর

news image

বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলো ভারত

news image

প্রথম প্রান্তিকের ধাক্কা কাটিয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াল জিডিপি

news image

আইএমএফ-এর ঋণের অর্থ ছাড়ে সঙ্কট!

news image

চট্টগ্রাম কেইপিজেড পরিদর্শনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা

news image

আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫ শুরু

news image

রেমিট্যান্স প্রবাহে অভূতপূর্ব উল্লম্ফন, মার্চে সর্বোচ্চ আয়

news image

ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কারোপের প্রভাব সামাল দেয়া কঠিন নয়: অর্থ উপদেষ্টা

news image

ট্রাম্পের শুল্কে পোশাকের চাহিদা কমবে

news image

বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

news image

ঋণের অর্থ ছাড়ের আগে আসছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল