মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

এনএস রিপোর্ট 

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা রইলো না।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন। 

বেঞ্চের অন্য ছয় বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মো.  আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি ইমদাদুল হক, বিচারপতি মো. আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। 

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পেলেন।

আদালতে এটিএম আজহারের পক্ষে উপস্থিত থাকা আইনজীবীরা হলেন- মোহাম্মদ শিশির মনির, এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক, ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও নাজিব মোমেন। 

এ দিন আদালতে জামায়াত নেতাদের মধ্যে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলালসহ দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বহু নেতা উপস্থিত ছিলেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষ হয়েছিল গত ৮ মে। সেদিন এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ২৭ মে দিন ধার্য করা হয়েছিল। 

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডাদেশের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। সে সময় আইনজীবীরা তার খালাসের পক্ষে ১১৩টি যুক্তি তুলে ধরেন। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়।

পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। তখনকার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দিয়েছিলেন। 

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা করেন। ১৭ জনকে অপহরণ ও একজনকে ধর্ষণ করেন। ১৩ জনকে আটক নির্যাতন ও গুরুতর জখম করেন। এছাড়া শত শত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করেন। উত্থাপিত এসব অভিযোগের মধ্যে এক নম্বর ছাড়া বাকি ৫টিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।