বৈঠকের পরও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না আসায় হতাশ বিএনপি

এনএস রিপোর্ট 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে বিএনপি।  দলটির নেতারা বলছেন, তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেছেন। কিন্তু নির্বাচন বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা না দেওয়ায় বিএনপি হতাশ।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে এমন হতাশার কথা জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত ২৪ মে বিএনপি'র একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে। একই দিন আরো দুইটি দল সাক্ষাত করেছে। এরপর আমরা সাংবাদিকদের সামনে আমাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছি। পরের দিন আরও ১৯টি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাত করে। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মাধ্যমে সরকারের যে বক্তব্য পাওয়া গেছে তাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। যা বিএনপিকে হতাশ করেছে। 

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত শনিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতিতে যে বক্তব্য জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে তা অস্পষ্ট বিভ্রান্তিকর। তিনি বলেন, বিভিন্ন মহলের অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি-দাওয়া এবং এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য সরকারের স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বিনষ্ট করছে, এমন অভিযোগ সরকারের পক্ষ থেকে তোলা হয়েছে। এটি মূলত সরকারের নিজস্ব অর্জন। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি, এখনো চায় না। কিন্তু আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে ২০২৫ সালের মধ্যে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছি।

আমরা মনে করি, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই সংস্কারও নির্বাচন প্রক্রিয়া দু'টিই একসাথে চলতে পারে। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির এবং ব্যক্তির অর্থাৎ দল এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার প্রক্রিয়া চলবে।

সংবাদ সম্মেলনে ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন আরো বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই এদেশের জনগণ রক্ত দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। অথচ সরকারের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রতি ইশরাক হোসেনের পক্ষে আদালতের রায় অনুযায়ী গেজেট নোটিফিকেশন হয়েছে। অথচ সরকার তার শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করেনি।

আবারো ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবী জানিয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এই জন-আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানতম এজেন্ডা হওয়া উচিত। অন্যথা হলে জনগণের দল হিসেবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে যাবে। 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।